দিল্লিতে অক্সিজেন সংকটে বড়বোন, দোয়া চাইলেন শবনম ফারিয়া
অভিনেত্রী শবনম ফারিয়ার বড়বোন বন্যা থাকেন দিল্লিতে। সম্প্রতি করোনায় দিল্লি ও মহারাষ্ট্র করোনার তাণ্ডবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। যার আঁচ লাগে শবনম ফারিয়ার বোনের পরিবারে। করোনা আক্রান্ত হন বোন, দুলাভাই ও তাদের সন্তানেরা। সকলেই করোনার ধকল কাটিয়ে উঠলেও বোন বন্যা এখনও কঠিন অবস্থার মধ্য দিয়ে যাচ্ছেন। অ্যাজমা ও ডায়াবেটিসের সমস্যাও বেড়েছে। এমন অবস্থায় বড়বোনের জন্য দোয়া চেয়েছেন শবনম ফারিয়া। কদিন ধরে একাধিক ফেসবুক পোস্টের মাধ্যমে দেশের মানুষজনের দয়া চেয়ে চেয়েছেন শবনম ফারিয়া। গত রাতে একটি আবেগময় পোস্ট দিয়েছেন ফেসবুকে।
শবনম ফারিয়া লিখেছেন, 'আমার বড় বোন আমার ১৬ বছর আর মেঝো বোন প্রায় ১২ বছরের বড়! আমার সারাজীবন কষ্ট ছিল, অন্যদের বোনদের সাথে যেমন বন্ডিং থাকে আমার নাই! ইনফ্যাক্ট আমার বড় দুইবোনের নিজেদের মধ্যে যেই বন্ডিং সেইটা আমার সাথে নাই! আমার বয়স যখন সাড়ে তিন বড় আপুর বিয়ে হয়ে গেছে, ৫ বছর বয়সে ছোট আপু পড়াশুনার জন্য বাসার বাইরে, তারপরতো বিয়েই হয়ে গেল আপুর! আমি সেভাবে কখনও আমার বোনদের সাথে থাকি নাই, বরং আমার ভাগ্না-ভাগ্নি আমার বন্ধু!'
এই অভিনেত্রী আবেগাক্রান্ত হয়ে লিখেছেন, 'বয়সে যুগের পার্থক্য থাকায় আমার সাথে ওদের একটা জেনারেশন গ্যাপ সব সময়ই প্রকট! তার উপর তাদের সব সময় মনে হতো “ভাল ফ্যামিলির মেয়েরা মিডিয়াতে কাজ করে না” , এইটা নিয়ে আমার দুঃখের সীমা-পরিসীমা নাই! কখনও উৎসাহ দুরের কথা , পারলে দুই-চারটা কথা শোনানোর সুযোগ পেলে মিস করে না! কষ্ট উপর ডাবল কস্ট!'
বোনের সাথে আলাপ হয়েছে উল্লেখ করে বলেন, 'কিন্তু পরশু আমার বড় আপু যখন বললো, “তৃপ্তি আমার খুব কস্ট হচ্ছে” আমি জানি ফোনটা রেখে আমি কতক্ষন হাউ-মাউ করে কাদসি! আমার মেঝো বোন কল করে কাঁদতে কাঁদতে যখন বললো “তৃপ্তি আমার বুকটা ফেটে যাচ্ছে , আমি এতো মানুষকে খাওয়াই, আমার বোন বিদেশে শুয়ে খাওয়ার কস্ট পাচ্ছে” কি বলে আমার বোনের সান্তনা দিবো!
শবনম ফারিয়ার বাবা ডাক্তার ছিলেন উল্লেখ করে ফারিয়া বলেন, আমার বাবা ডাক্তার ছিলো, সবার সব অসুস্থতায় বাবার কাছে আসতো! আজকে দিল্লিতে আমার বোন অক্সিজেন-এর অভাবে কষ্ট পাচ্ছে! আমরা হেল্পলেস, কিছু করার নাই। আমরা পরশু পর্যন্ত মার কাছ থেকে পুরা বিষয়টা গোপন করে রেখেছি, কালকে মোঝবোন বললো, “তৃপ্তি আম্মু দোয়া করলে যদি বন্যা ভাল হয়ে যায়, চল আমরা আম্মুকে জানাই।"
এই অভিনেত্রী বলেন, গত দুইদিন আমার মার মুখের দিকে তাকানো যায় না, তার বড় মেয়ে , ১৮ বছর বয়সে তার মেয়ে হইছে , যখন সে নিজেই বাচ্চা... সেই মেয়ের এই অবস্থা তো তার সহ্য হয় না। তাও এতো দুরে এখন! আমরা আসলে কাছের মানুষদের উপরই বেশি অভিমান করি , কষ্ট পাই, রাগ করি , আর সম্ভবত সেজন্যেই তারা কাছের মানুষ ! দুরের মানুষের সাথে আর কিসের রাগ!
সকলের নিকট দয়া চেয়ে শবনম ফারিয়া বলেন, কিন্তু কিছু ঘটনা আসে , তখন বুঝতে পারি আমাদের জীবনে তারা কত স্পেশাল , তাদের আমরা কত ভালোবাসি, তারা কত কিছু করে আমাদের জন্য। সবার কাছে একটা অনুরোধ , আপনার দোয়ার সময় আমার বড় আপুর কথা একটু স্মরণ করবেন। ঢাকায় বসে আসলে দোয়া করা বা দোয়া চাওয়া ছাড়া আমাদের কিছু করার নাই।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন